তৃণমূলে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিচ্ছে ‘ওয়াই-ফাই হাট’

তৃণমূলে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিচ্ছে কার্নিভালের ‘ওয়াই-ফাই হাট’
তিন মাসে পৌঁছে গেছে ৩৫০ চা দোকানে
তিন বছরে ১০ হাজার গ্রামে পৌঁছনোর পরিকল্পনা

গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ও ডিজিটাইজেশনের মাঝের শূন্যস্থান পূরণে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন প্রয়োগের মাধ্যমে কার্নিভাল ইন্টারনেট নিয়ে এসেছে ‘ওয়াই-ফাই হাট’। তৃণমূলে সাশ্রয়ী দামে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রামের চায়ের দোকানগুলোয় ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ওয়াই-ফাই হাট গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সাত টাকায় দুই ঘণ্টা, ১৫ টাকায় এক দিন এবং ২৫ টাকায় দুই দিন ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে তারা। ওয়াই-ফাইয়ে সংযুক্ত হয়ে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের স্ক্র্যাচ কার্ড কিনে সেখান থেকে গোপন নম্বরটি তার ডিভাইসে প্রয়োগ করতে হয়।
আর সেখান থেকেই গ্রামীণ মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে তাদের দৈনন্দিন জীবনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সূচনা হয়।
ওয়াই-ফাই হাট ব্যবহারের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের পাথরঘাটা গ্রামে একটি ছোট মুদির দোকনদার রফিক ইসলাম তাঁর ব্যবসায় পরিবর্তন দেখতে পেয়েছেন। তাঁর দোকানে ওয়াই-ফাই রাউটারটি বসানোর কিছুদিনের মধ্যে এই বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ করেন তিনি। ইন্টারনেটের ব্যবহার যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে তাঁদের মুদির দোকনটিতে। এই ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে শুধু তিনিই নন, গ্রামের সবাই যেন একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। এখন রফিক ইসলাম শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই নয় বরং তাঁর দোকানে আসা ক্রেতাদের কাছে হাই স্পিড ইন্টারনেটও বিক্রি করে থাকেন। ছোট একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখন একটি কমিউনিটি হাবে পরিণত হয়ে উঠেছে, যার মাধ্যমে লোকেরা ইন্টারনেট এবং তার বিস্ময়ের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এটি এখন এমন একটি কমিউনিটিতে পরিণত হয়েছে, যা এটির সঙ্গে সংযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সহযোগিতার একটি বিশেষ মাধ্যম হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেসব কৃষক তাঁর দোকানে আসে তারা ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই বীজ, আবহাওয়া এবং বাজারমূল্য সম্পর্কে জানতে পারে। ফলে শহর এবং গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল সংস্কৃতির যে বাধা আছে, তা অতিক্রম করে তারা নিজেদের সমৃদ্ধ করে তোলে।
কার্নিভাল ইন্টারনেটের ‘ওয়াই-ফাই হাট’ এরই মধ্যে গত তিন মাসে গ্রামীণ বাংলাদেশজুড়ে ৩৫০টিরও বেশি চা দোকানে পৌঁছেছে। এই গ্রামীণ ওয়াই-ফাই হাটগুলোর মাধ্যমে এরই মধ্যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে।
কার্নিভাল ইন্টারনেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জামান খান বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামীণ ইন্টারনেট অভিজ্ঞতার উন্নয়ন। পরবর্তী তিন বছরে, আমাদের দেশে ১০ হাজার গ্রাম স্পর্শ করার মাধ্যমে ৫০ হাজার এমন কার্নিভাল ওয়াই-ফাই হাট স্থাপনের জন্য আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, কার্নিভাল রুরাল ইন্টারনেট গ্রাম ও শহরের ডিজিটাল ব্যবধানগুলোকে কমিয়ে আনবে এবং গ্রামাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর তাদের গ্রাম বা কমিউনিটির বাইরে বের না হয়েই নিজ নিজ ক্ষেত্রগুলোতে সাফল্য অর্জন নিশ্চিত করতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। ’
Source: কালের কণ্ঠ

Payment Option